নিজস্ব প্রতিবেদক:
ট্রাফিক বিভাগের জিরো টলারেন্স নীতিতে ছাড় পাচ্ছে না কেউ। যেকোন অনিয়মে দিয়ে দেয়া হচ্ছে মামলা। ট্রাফিক সপ্তাহের শেষ দিনে নারায়ণগঞ্জ জেলায় মোট ২ হাজার ৭ শ’টি মামলা করা হয়েছে।
শনিবার (১১ আগস্ট) সকালে জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারা দেশে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে সরকার বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের ঘোষণা করে। এই বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হয় ৫ আগস্ট থেকে। ৫ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত এই ৭ দিনে নারায়ণগঞ্জে যানবাহনের বিরুদ্ধে মোট মামলা দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৭ শ’ টি। বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের প্রথম দিন, রবিবার (৫ আগস্ট) ৪ শ’ ৯৮টি, পরের দিন ৪ শ’ ৮৬টি, তৃতীয় দিন ৪ শ’ ২৭টি, চতুর্থ দিন ৪ শ’ ৪৭টি, পঞ্চম দিন ৩ শ’ ৭২, ষষ্ঠ দিন ৩ শ’ ৪৭টি এবং ৭ম ও শেষ দিনে ১ শ’ ২৬টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।
যানবাহন চালকের লাইসেন্স, রুট পারমিট, গাড়ির লাইসেন্স, ফিটনেস, হেলমেট, সিটবেল্ট পরিধান এসবের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। এসবের মধ্যে যেকোন একটির অনিয়ম চোখে পড়লেই মামলা দিয়ে দেয়া হচ্ছে। কোন প্রকার উৎকোচ কিংবা তদবিরে কাজ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. শরফুদ্দিন জানান, উপর থেকে নির্দেশ আছে, কাউকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। কোন তদবির চলবে না। কোন অনিয়ম থাকলে কিংবা গাড়ির কোন কাগজপত্র না থাকলে মোটরযান আইন অনুযায়ী মামলা দিয়ে দেয়া হচ্ছে। লাইসেন্স, সিট বেল্ট, হেলমেট না পড়া এসব দিকে বেশি জোড় দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছি আমরা। ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হলেও আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলতে থাকবে। তবে এই ট্রাফিক সপ্তাহের মধ্যেই অনেকে সচেতন হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
ট্রাফিক সপ্তাহে পুলিশকে সার্বিক সহযোগীতার জন্য সরকারি তোলারাম কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের প্রায় ৫০ জন রোভার স্কাউটের সদস্যরা পুলিশকে সহযোগীতার করেছে। পুলিশকে এ সহযোগীতার জন্য ৫০ জন রোভার স্কাউট সদস্যদের ট্রাফিক পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে উৎসাহ-মূলক সনদ প্রদান করা হবে।
শিমরাইল মোড়, সাইন বোর্ড, চাষাড়া চত্বর, কলেজ রোড ও খানপুর হাসপাতালের সামনে ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে এ অভিযান চালানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলায় জাবালে নূর নামে দুই বাসের রেষারেষিতে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। আহত হয় আরো ১৩ জন। এই ঘটনায় ওই দিনই বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর এই ঘটনা মহামারি রুপ নেয় সারাদেশে। বাদ যায়নি নারায়ণগঞ্জও। নিরাপদ সড়কের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ শিক্ষার্থীরা টানা দুই দিন সড়ক অররোধ করে বিক্ষোভ করে। এরপর আরো কয়েকদিন চলে তাদের আন্দোলন। এসময় তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে সরকার বরাবর ৯টি দাবি উত্থাপন করে। সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়ে সড়কে যানবাহন নৈরাজ্য কমাতে বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের ঘোষণা করেন। যা আগামীকাল শেষ হবে।